সাহাদাত হোসেন দিপু ঃ-
নীতিমালা অনুযায়ী,স্বাস্থ্যসেবা খাতে বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন ছাড়াই সেবা কার্যক্রম চালু করতে পারে। এসব প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম চলমান থাকা অবস্থায় ধাপে ধাপে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থেকে ছাড়পত্র নিয়ে চূড়ান্তভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিবন্ধন নেয়। নীতিমালার এই সুযোগকে ব্যবহার লক্ষীপুরে গড়ে উঠেছে শতাধিক অনুমোদন বিহীন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান।
(আরও পড়ুন নামসহ ১৫ টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্টানে অনিয়ম ও দূর্ণীতি)
অনুমোদনহীন কিংবা অবৈধ স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার উদ্দেশ্য লক্ষীপুরে সিভিল সার্জনের আওতায় জেলাজুড়ে নিবন্ধনহীন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তবে এই কার্যক্রম ধারাবাহিক চালু থাকার কথা থাকলেও হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান শেষে স্থগিত রয়েছে কার্যক্রম। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নির্দেশিত ৭২ ঘন্টা পরবর্তী দেশে অনিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল,ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো বন্ধ করার কথা থাকলেও জেলাজুড়ে চলমান রয়েছে অগনিত অনিবন্ধিত স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান। ফলে স্বাস্থ্য খাতে শৃঙ্খলাও ফিরে আসেনি,চিকিৎসাপ্রার্থীদের প্রতারিত হওয়াও বন্ধ হয়নি।
লক্ষীপুর জেলা সিভিল সার্জন বিভাগ থেকে জানা যায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নির্দেশনার পর বিগত ১ সপ্তাহে জেলাজুড়ে অনেকগুলো স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
এদিকে, যারা চিকিৎসার নামে প্রতিদিন রোগীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে, ন্যূনতম আর্থিক জরিমানা তাদের ব্যবস্থায় খুব একটা পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছে না জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্রমতে, স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে প্রয়োজন হয় ৫টি লাইসেন্স। নিবন্ধনের জন্য আবেদন পত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরে জমা দিতে হয় পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স, ট্রেড লাইসেন্স, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স। জেলা জুড়ে প্রায় দেড় শতাধিক স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত রয়েছে। যার মধ্যে হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংক আছে । এর বাহিরে রয়েছে শতাধিক অনিবন্ধিত স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সদর উপজেলার মান্দারী ও চন্দ্রগঞ্জে একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলো অনলাইন লাইসেন্স গ্রহণ কিংবা হালনাগাদ নবায়ন ও সঠিক নিয়মে আবেদন ব্যতীত রোগী ভর্তি, বিভিন্ন ধরনের অপারেশন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা সহ অবৈধভাবে সকল ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে । এছাড়াও সিভিল সার্জন বিভাগে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা অধিকাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের নেই প্রয়োজনীয় দপ্তরের ছাড়পত্র। ফলে ছাড়পত্র ছাড়া আবেদনকৃত অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন পত্র পায়না। তবে নিবন্ধনপত্র ছাড়াই তাদের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম অব্যাহত থাকে।
লক্ষীপুর জেলার জেলা প্রশাসক মোঃ আনোয়ার হোছাইন আকন্দও এ বিষয়ে বলেন, প্রতিমাসে জেলা ব্যাপী অবৈধ এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হবে।
লক্ষীপুর জেলার সিভিল সার্জন ডা: আহাম্মদ কবীর জেলাব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা প্রসঙ্গে বলেন, আমরা অভিযানে যেসব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত করা হয়নি সেগুলো আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হবে। অবৈধ ভাবে ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(আরও পড়ুন নামসহ ১৫ টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্টানে অনিয়ম ও দূর্ণীতি)