অভাবের তাড়নায় সন্তান বিক্রি করে মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টা

বাংলাদেশ

দিগন্ত ডেস্ক :-
সন্তানের প্রতি মায়ের টান অকৃত্রিম। তবে অভাবের তাড়নায় নিজের ঔরসজাত সন্তানকে বিক্রি করে দিলেও তার কথা মনে পড়তেই আত্মহননের পথ বেছে নেন হতভাগা মা। ত্রাতা হয়ে আসে পুলিশ। বিষয়টি জানতে পেরে শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে।

বুধবার দুপুরে শেরপুর সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের সাপমারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুই স্ত্রী থাকার পরও সদর উপজেলার সাপমারী গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে সুলতান দুই বছর আগে গাজীপুর জেলার মাওনা এলাকার আব্দুল আজিজের মেয়ে সুমা আক্তারকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসে। ৬ মাস আগে সুলতান-সুমার সংসারে এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। সিজারিয়ান অপারেশনে ছেলে সন্তানের জন্মের সময় ২২ হাজার টাকা খরচ হয়। সন্তান জন্মের পর তাকে লালন-পালন করতে গিয়ে ধারকর্জ করতে হয় সুলতানকে। পরে স্ত্রী সুমার থেকে টাকা দাবি করেন সুলতান। এমন পরিস্থিতিতে ধারকর্জ শোধ করার জন্য শিশু সন্তানকে বিক্রি করে দেয় তারা। একই এলাকার প্রতিবেশী কাপতুল মণ্ডলের ছেলে শফিকের কাছে ৬ মাসের ঔরসজাত শিশু সন্তানকে মাত্র ৯১ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেন।

সন্তান বিক্রি করে দিলেও মায়ের মন সন্তানকে কাছে পেতে চায়। এজন্য বুধবার সকালে শিশুটির মা সুমা আক্তার তার শিশুকে দেখার জন্য প্রতিবেশী শফিকের বাসায় যান। শিশুটি বাসায় নেই বলে তাকে তাড়িয়ে দেয় শফিক। পরে বাড়ি ফিরে ইউরিয়া সার খেয়ে আত্মহননের চেষ্টা করেন সুমা।

স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে অসুস্থ সুমা আক্তারকে উদ্ধার করে শেরপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে সদর থানা পুলিশ। পরে শিশু বিক্রির ঘটনায় বাবা সুলতান মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়।

সদর থানা পুলিশের একটি দল শিশুটির ক্রেতা শফিকের বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখান থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসাধীন মা সুমা আক্তারের কোলে ফিরিয়ে দেন।

এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, খবর পেয়ে শিশু সন্তানটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। শিশুটির বাবা সুলতানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।

সূত্র : ইউএনবি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *